সে মতে অধিকাংশ স্থানীয় লোক এবং স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ও নারায়ণগঞ্জের সাব-ডিভিশনাল অফিসার এবং ঢাজা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও স্কুলসমূহের ইন্সপেক্টর, দাতাত্রয়ের স্বত্ব দখলীয় এ ভূমি পছন্দ করেন। স্কুল কমিটির সেক্রেটারির বরাবরে এবং স্কুল কমিটির পক্ষে বিনা সেলামিতে সামান্য জমায় বিদ্যালয়ের এ দুর্যোগের সময় ১৫/১২/১৩২৮ বাংলা ৩০/০৩/১৯২২ ইংরেজি তারিখে বন্দরের তদানীন্তন জমিদার শ্রী দিগেন্দ্র মোহন সেন রায়, শ্রী সুরেন্দ্র মোহন সেন রায়, শ্রী সচিন্দ্র মোহন সেন রায় পিতা মৃত রেবতী মোহন সেন রায় জমি দান করতে রাজি হন। দাতাগণ এ স্কুলে তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে স্কুলের ভবনের গায়ে “আমাদের সৌজন্যে স্কুল এ জমিতে প্রতিষ্ঠিত হইল” যার ইংরেজি অনুবাদ (Land Attained by courtesy of Babu D. M. Sen Roy) এ কথাটি স্কুলের বভনের গায়ে খোদিত থাকবে এবং তাদের পিতাসহ বর্তমান স্কুলের ভূতপূর্ব সেক্রেটারি স্বর্গীয় হরি মোহন সেন রায়ের একটি তৈল চিত্র, স্কুল নিজ ব্যয়ে এবং একটি মর্ম্মর প্রস্তর নির্মিত প্রতিমূর্তি তাদের নিজ ব্যয়ে প্রস্তুত করে স্কুল লাইব্রেরিতে স্থাপন করবেন। স্কুল লাইব্রেরি অর্থাৎ স্কুল সংলগ্ন পুস্তকালয়টি দলিল দাতা শ্রী দিগেন্দ্র মোহন সেন রায় নিজ নামে প্রতিষ্ঠা করবেন। ঈশ্বর না করুন যদি কোন কারণে উক্ত হাই স্কুলটি ভেঙ্গে যায় অথবা স্থানান্তরিত হয় এবং উক্ত ভূমি অন্য কোন উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত না হয়, তবে এ পাট্টা ও গ্রহীতার প্রদত্ত কবুলিয়ত বাতিল মর্মে গণ্য হবে। যদি স্কুলটি কলেজে পরিণত হয়, তা হলে এক দলিল ও গ্রহীতার প্রদত্ত কবুলিয়ত প্রবল থাকবে, মর্মে শর্ত আরোপ করেন। পাট্টা গ্রহীতা ছিলেন পির মোহাম্মদ, পিতা মৃত গুল মোহাম্মদ হাজী সাং- মদনগঞ্জ, থানা- সোনাকান্দা, জিলা- ঢাকা, সোনাকান্দা বি.এম.ইউনিয়ন হাই স্কুলের সেক্রেটারি জাতি মুসলমান, ব্যবসা তালুকদারি ও তেজারতি। এ পাট্টামূলে ২৪০ নং গঙ্গাকুল বন্দর মৌজার ২৫ নং খতিয়ানের ২৫২ দাগের অংশ, ৩৭ নং খতিয়ানের ২৪৭ দাগের, ৪৪নং খতিয়ানের ২৪৫ দাগের, ২৪৩ দাগের অংশ এ চৌহদ্দির মধ্যে ভিটি ভূমির ৬৮ শতাংশ বা দুই বিঘা চৌদ্দ ছটাক জমি দান করেন। দাতাদের
পিতামহী স্বর্গীয়া কালী তারা চৌধুরানী মালিক দখলকারিনী থাকা অবস্থায় ঢাকার প্রথম সাব-জজ আদালতের ইংরেজি ১৮৯৬ সালের ৫১নং বাটোয়ারায় মোকদ্দমায় পৃথক ছাহাম প্রাপ্তে উক্ত ছাহাম প্রাপ্ত ভূমিতে ষোল আনা মালিক দখলকারিনী থেকে পরলোক গমন করলে তাঁর ত্যাজ্য সম্পত্তিতে তারা পৈত্রিক ওয়ারিশ সূত্রে নির্বিবাদে মালিক দখলকার নিযুক্ত হয়ে দলিল সম্পাদন করেন। সে সাথে আর্থিক সহায়তা দিয়ে টিনের স্কুল ঘর তৈরি করেন। ফলে ১৯২২ সালে বিদ্যালয়টি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় এবং এ স্থানে শিক্ষা কার্যক্রম আবার শুরু হয়। বিদ্যালয়টি ১৯৩১ সালের পূর্বেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী স্বীকৃতি প্রাপ্ত হয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী স্বীকৃতি প্রাপ্ত স্কুলের তালিকায় স্কুলের নাম Bandar B.M Institution মর্মে তালিকাভূক্ত হয়েছে। উক্ত তালিকাটি ১৯৩১ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত সংশোধিত মর্মে উল্লেখ রয়েছে। অর্থাৎ ১৯৩১ সালের পূর্বেই স্কুলটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৩১খ্রি. ৮ জানুয়ারি এ বিদ্যালয়ের প্রথম একতলা স্কুল ভবনের উদ্বোধন করেন নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার তদানীন্তন চেয়ারম্যান মি. এইচ এম সিরকোর। ১৯৪৭ সালে বিদ্যালয়টি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং পরবর্তীতে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের স্বীকৃতি প্রাপ্ত হয়। অতপর ২০০৫ সাল হতে ২০১৬ এর মধ্যে তদানীন্তন গভর্নিং বডি মোট ২৯.৪১ শতক জমি ক্রয় করেন। ২০১৩ সালে এ বিদ্যালয়ে ইন্টারমিডিয়েট অর্থাৎ কলেজ শাখা চালু করা হয় এবং এর নামকরণ করা হয় বি.এম.ইউনিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, যার কলেজ কোড নং ২৫২৯। ২০১৩-২০১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এ সেশনেই কলেজটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠদানের অনুমতি ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার অনুমোদন পায়। ২০১৮ সালে গভর্ণিং বডি বন্দর পুলিশ ফাঁড়ি রাস্তার পূর্ব পাশে ৩২ শতাংশ জায়গা দুই কোটি টাকায় ক্রয় করেছে। সেখানে প্রাথমিক শাখা (প্লে থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত) ২০১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে চালু করেন। ২০২০ সালে শাখা বৃদ্ধির সুবিধার্থে একতলা ভবনটি সম্প্রসারণ করে ৪ তলায় উন্নীত করা হয়। এ সময় থেকে শ্রেণি শাখায় ছাত্র সংখ্যা কমিয়ে ৫টি শ্রেণি শাখা বাড়ানো হয়।
মোঃ খলিলুর রহমান
সভাপতি, গভর্ণিং বডি ও সচিব
ডাক ও টেলি যোগাযোগ বিভাগ
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার